অটো রিকশাওয়ালা বাংলা ভুতের গল্প
অটো রিকশাওয়ালা
ঘটনাটি আমার এক বন্ধুর মুখে শোনা ঘটনাটি তেমন স্পর্শকাতর' না।তার নাম আমি প্রকাশ করতে পারছি না।যাইহোক এখন চলে আসি মুল ঘটনাই। আমার চাচ্চু একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি ছোট থেকেই খুব কঠোর ভাবে রুটিন মেনে জীবন অতিবাহিত করতেন। কোনদিন তিনি কোন বাজে অভ্যাস বা কোন বাজে কাজে সময় নষ্ট করতেন না। আর ভূত-প্রেতের কথা তো বিশ্বাসই করতেন না বললেই হেসে উড়িয়ে দিতেন।
যেহেতু পেশায় একজন চিকিৎসক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তাই উনি এইসব জিনিস কি একদম পাত্তা দিতেন না।
কিন্তু একটি ঘটনা তার জীবন পাল্টে দেয় সেই কাহিনী তার ভাষাতেই বলি। 2017, সেই বছর কোরবানির ঈদ পালন করতে আমি আমার গ্রামের বাড়ি যাই। আমার বাড়ি ময়মনসিংহ, জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার, অনেক কঠিন এক গ্রামে। যেহেতু আমি পেশায় একজন ডক্টর। সকালে আমি গ্রামে যাওয়ার সাথে সাথেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করলো এবং আমিও শান্তি মতো তাদের চিকিৎসা করতে থাকলাম আমার বাড়ির পাশেই ছিল একটি মসজিদ ওই সময় ততটা ধর্মপরায়ণ না হওয়ায় নামাজ পড়তাম না। তবুও ডাক্তার হওয়ার কারণে এলাকার সব মানুষ আমাদের সম্মানের চোখে দেখত। মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে আমার অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল একদিন এশার নামাজ পড়ার পর মসজিদের ইমাম সাহেব আমার সাথে দেখা করতে আসবেন যথারীতি তিনি আমাকে ইসলাম এবং দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন আর অন্যান্য সময়ের মতো আমিও সেগুলো এড়িয়ে যাচ্ছিলাম।
কিন্তু একটি ঘটনা তার জীবন পাল্টে দেয় সেই কাহিনী তার ভাষাতেই বলি। 2017, সেই বছর কোরবানির ঈদ পালন করতে আমি আমার গ্রামের বাড়ি যাই। আমার বাড়ি ময়মনসিংহ, জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার, অনেক কঠিন এক গ্রামে। যেহেতু আমি পেশায় একজন ডক্টর। সকালে আমি গ্রামে যাওয়ার সাথে সাথেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করলো এবং আমিও শান্তি মতো তাদের চিকিৎসা করতে থাকলাম আমার বাড়ির পাশেই ছিল একটি মসজিদ ওই সময় ততটা ধর্মপরায়ণ না হওয়ায় নামাজ পড়তাম না। তবুও ডাক্তার হওয়ার কারণে এলাকার সব মানুষ আমাদের সম্মানের চোখে দেখত। মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে আমার অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল একদিন এশার নামাজ পড়ার পর মসজিদের ইমাম সাহেব আমার সাথে দেখা করতে আসবেন যথারীতি তিনি আমাকে ইসলাম এবং দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন আর অন্যান্য সময়ের মতো আমিও সেগুলো এড়িয়ে যাচ্ছিলাম।
হঠাৎ তিনি আমাকে বলে বসলেন বাবা তুমি কি ভূতে বিশ্বাস করো। আমি একটু হেসে বলি না চাচা আমি অবাস্তব কোন জিনিসে বিশ্বাস করি না যা কিছু নিজের চোখে দেখি তাই বিশ্বাস করি শুনে হুজুরদের পাকা দাঁড়িয়ে হাত বুলিয়ে বললেন, যদি নিজের চোখে দেখো তাহলে বিশ্বাস করবে। আমি হেসে বললাম কেন নয় আমি তো দেখতে চাই তার প্রমাণ করে দিতে চাই এই সব যে ভূত বলে কিছু নেই। সব মানুষের কল্পনা আর ধর্মব্যবসায়ীদের টাকা উপার্জনের হাতিয়ার। আমার কথা শুনে ইমাম সাহেব মাথানিচু করে কি যেন ভাবছিলেন তারপর মাথা তুলে বললেন না বা এই ভাবে বলতে হয় না। যেদিন তোমার মুখোমুখি হবে সেদিন হবে অনেক ভয়াবহ একটা দিন। এই বলে ইমাম সাহেব চলে যান আর বলে জান আগামী কাল রাতে একটা জিনে ধরা মেয়েকে দেখতে যাবেন। তিনি আমিও সেখানে যেতে চাই কিনা জানতে চান। আমি সাথে সাথে রাজি হয়ে যায় দেখাই যাক না কি হয় কিন্তু আমার জন্য অনেক ব্যস্ততায় কিভাবে দিন গড়িয়ে রাত নেমে এলো খেয়ালই নেই। এশার নামাজের পর সেই ইমাম সাহেব আমাকে ডাকেন। আমিও বাড়ি থেকে বের হই। আমি ভুলেই গিয়েছিলাম আজকে ওনার আমাকে নিয়ে কোথাও যাওয়ার কথা। তাই দেরী না করে ওনার সাথে যাচ্ছিলাম।
হুজুরের সাথে তার মুয়াজ্জিন আর মাদ্রাসায় পড়া দুজন কিশোর বয়সে ছাত্র ছিল। তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলামনা। হাটছি তো হাটছি। যাওয়ার পর থেকেই আমার সাথে কথাবার্তা কমিয়ে দেন আর গুনগুন করতে করতে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত পড়তে শুরু করেন। আমি কুরআনের খুব বেশি সূরা পারতাম না তাহলে আমাদের মত কোরআন না পড়ে পথে নিজের লক্ষ্য রাখে। সেই রাতটা ছিল জ্যোৎস্নায় ঝলমলে রাত।তাই আমরা আমাদের সাথে আনা মোবাইলগুলো আলো না জালিয়ে চাঁদের আলোতে পথ চলছিলাম। আমি এদিক সেদিক তাকাতেই হঠাৎ লক্ষ্য করি রাস্তার পাশের পুকুরে যেন বারবার কারা একটা ভাসছে আমিতো অবাক হয়ে দাঁড়িয়েছি। তারা এই রাতে পুকুরে গোসল করে। ওই দিকে হুজুরদের কোরআন পড়ার আওয়াজ টা অনেক বেড়ে গিয়েছিল আমি অনেক ভালো করে দেখার জন্য যেই পুকুরপাড়ের দিকে যাচ্ছিলাম তখনই আমাকে মুয়াজ্জিন এখান থেকে টেনে নিয়ে আসেন।
সূরা ইয়াসিন পরতে পরতে বলেন এদিক সে দিক তাকাবে হিসেব করে আমিও এই ব্যাপারটা খুব অবাক হই। কিছুদুর আসার পর আমরা সেই ঝিম ধরা মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হই। বাংলা বাড়ি সেটা সেই বাড়িতে তখন বিদ্যুৎ না পৌঁছালেও হারিকেন আর কোভিদ আলো জ্বেলে রেখেছে তারা। আমাদেরকে একটা বসার ঘরে বসিয়ে রেখে তারা চলে গেলেন মেয়েকে আনতে।
কিছুক্ষণ পর তার একটি মেয়েকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করার সাথে সাথে সেই ঘরের পরিবেশ বদলে যায়। ভয়ঙ্কর গুমোট সেই পরিবেশ আর সেইসাথে চলছিল হুজুরের কোন কোন শব্দে কুরআন পাঠ। বলে রাখা ভালো সেই মেয়েটির অপরূপ সুন্দরী কিন্তু মেয়েটার মধ্যে কিছু হচ্ছিল যা আমাকে বারবার অস্বস্তিতে ফেলেছিল। আর আশ্চর্যের বিষয় আমি অনেকের কাছে শুনেছিলাম জিনে ধরা কাউকে হুজুরের কাছে আনলে ইন্টারনেট অনেক ঝামেলা করে। তেরে এসে মারতে চায়। কিন্তু এই মেয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক। তার সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছিল। কুরআন শরীফ পড়ছিলো সবাই। আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম মেয়েটা মাথা নীচু করে ছিল।
কিছুক্ষণ যাওয়ার পর মেয়েটা সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে অদ্ভুতভাবে বলে ওঠে, মতিন! মালিবাগ আমি আসতে পারি আসলেই যখন তখন??তার যাবলে কেমন মৃত্যু পছন্দ তোর? এটা শুনে আমি সহ ঘরের সবাই স্তব্ধ হয়ে যায় আমার হাত-পা কাঁপছিল। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না অপরিচিত কম বয়সী মেয়ে কিভাবে আমার নাম ধরে ডাকবে এইসব ভাবছিলাম। আর তখনই মেয়েটা বলে উঠলো কিরে কি ভাবছিস আমি কিভাবে আপনাকে জানলাম আমি তো সব জানি তুই কোথায় আছিস কি করিস তোকে তো আমরা এমনি ছেড়ে দিব না। আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না আমি প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে খুঁজিতে বললাম বন্ধ করো এসব। আমি সব বুঝেছি আমি অবিশ্বাস করেছি বলে প্ল্যান করে আপনারা সমস্ত নাটক সাজিয়েছেন।।আমি এসব বলেই হুজুরদের দিকে তেড়ে যাই। আর ঠিক তখনই অদৃশ্য কেউ আমার গালে প্রচন্ড জোরে চড় বসিয়ে দেয়। আরা তার সাথে সাথেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই ।
যখন জ্ঞান ফিরে আসে আমি তখন সেই বাড়িতেই। আমি কি হয়েছে জানতে চাইলে ইমাম সাহেব একটু মুখ ভার করে বলতে থাকেন তুমি যখন মেয়েটার সাথে কথা বলছিলে তখন সেই জিনকে আটকাতে ব্যস্ত ছিলাম আমি।আমরা প্রায় সকলেই গিয়েছিলাম। কিন্তু মাঝখান থেকে তুমি উত্তেজিত হয়ে পড়লে।আমাদের ওপর। আর ফিরে আসলে আমাদের দিকে। আর তখন আমাদের মনোযোগ এর ব্যাগাত হয় আমরা আর ওদেরকে আটকাতে পারিনি। আর ঠিক তখনই তুমি শূন্যের উপর দাঁড়িয়ে আচার খেয়ে পড়ে গেলে আর জিনগুলো আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু আর কিছু করার ছিল না তাই ইমাম সাহেব বাড়ি বন্ধ করে দিলেন। এভাবে আমরাও গ্রামে ফেরত আসলাম। সেদিন থেকে আমার জীবনে নেমে আসে ভয়ংকর দিনগুলো শেষে আমি বাবা মা আর ছোট বোনকে নিয়ে ঢাকার উত্তরায় আমার বাসায় চলে আসি। ধীরে ধীরে আমি গ্রামে এ ঘটনা একদম ভুলে যাই।
আমি উত্তরায় একটা প্রাইভেট চেম্বার এ স্টেজ প্রোগ্রাম করি।আমার রোগীর মধ্যে প্রায় সবাই মানসিক সমস্যা নিয়ে আসতো। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমার কাছে একজন রোগী আসে। আর কথাবার্তা বলে পরীক্ষা করে অস্বাভাবিক কিছু পাচ্ছিলাম না। তারপর সেই ভদ্রলোক কে জিজ্ঞেস করি কি সমস্যা আপনর। একটি খুলে বলুন। তারপর তিনি যা বলেন তা রোমহর্ষক। আমি কোন দিনও কল্পনা করিনি এমনটা হবে।
আমাদের ছেলের মতো হাসি খুশি ছেলে খুব কমই আছে কিন্তু এইবার কোরবানি ঈদে আমাদের সেই আনন্দ একদম শেষ হয়ে গেছে সেই দিনটার ঈদের তৃতীয় দিন। আর আমাদের পারিবারিক রীতি অনুযায়ী ঈদের তৃতীয় দিন আলাদা আলাদা তিনটা কোরবানি দিয়ে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা কোরবানির কাজ শেষ করে মাংস রান্না করে রেখেছিলাম কিন্তু আমাদের কাজের বুয়া কিছু একটা প্রয়োজনে রান্নাঘরে যায়। আর তখনই দেখে এক ভয়াবহ ঘটনা আমাদের আদরের ছেলেটা হাতে মাংস নিয়ে কাঁচা মাংস খাচ্ছে। নিজের চোখে এই দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়। তার জ্ঞান ফিরে আসতে তার মুখ থেকে আমরা এই কথাগুলো জানতে পারি। এরপর আমার ছেলে কিছু খায় না। মাঝে মাঝে চিৎকার করে উঠে বলে আমার রক্ত চাই। আমি একটু হাসলাম মনোবিজ্ঞানের ভাষায় রক্ত খাওয়া কে বলে চিল্ড্রেন ফ্রম। আমি সেই অনুযায়ী প্রেসক্রিপশন লিখছিলাম
লোকটা মাথা নীচু করে আমার দিকে তাকায়। তার চোখ ছিল রক্তবর্ণ প্রচন্ড হিংস্রতার সাথে আমাকে যে কথা বলে ছিলো তাহলো সে বলে mo3 রক্ত দিয়ে তারপর আমার শান্তি হবে।। আমি নিজেকে কোন রকমের সামলে সেই লোকটাকে বিদায় করে আমার সারা জীবনে বিজ্ঞানের প্রতি অগাধ বিশ্বাস থাকবে। নরমাল ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ ছিল। তা বার বার আমার মনকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছিল।
কিন্তু কে জানত সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যাবে।চেম্বার বন্ধ করে ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়েছে। তখন শুধু আমার ছোট বোন জেগেছিল আমার জন্য রাতের খাবার সাজিয়ে খেতে দেবে। রান্নাঘরে কিছু একটা আনতে চায় আমি বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি আমার বোনটি রান্নাঘর থেকে এখনও ফেরেনি। আমি কৌতুহলবশতঃ রান্নাঘরে ঢুকে আর যা পেয়েছি তা আমি কোনদিনও বিশ্বাস করতে পারিনি।
আমার ছোট বোন দাড়িয়ে দাড়িয়ে কাঁচা মাংস চিবিয়ে খাচ্ছে। তার ঠোঁট দিয়ে তাজা রক্ত বেরোচ্ছে আমাকে দেখতে পেয়ে সেই জিনিসটার হিংস্রতা বেড়ে যায়। ছুটে এসে আমার হাতে কামড় দিয়ে মাংস ছিঁড়ে নেয়। হাত দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। আমি প্রচন্ড জোরে চিৎকার দিয়ে উঠি। আর তারপর সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসে।
পরদিন সকালে নিজেকে আবিষ্কার করি হাসপাতালের বেডে আমি আমার হাতে ব্যান্ডেজ দেখতে পাই। আমার মা-বাবা আমার মনের কথা জিজ্ঞেস করি।
উত্তরে তারা বলে কাল রাতে আমরা ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ তোমার চিৎকার শুনে আমরাবের হয়ে আসি। _ সমাপ্তি _